মোঃ কামরুল ইসলাম রানা রাংগামাটি জেলা প্রতিনিধি:-
জেলা প্রশাসন ও বনবিভাগ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার আয়োজনে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ এর সভাপতিত্বে, “পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাঙ্গামাটি শহরস্থ জিমনেসিায়াম মাঠ প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০২৫ এর শুভ উদ্বোধন করেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব সুপ্রদীপ চাকমা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশন, ভৌত অবকাঠামো বিভাগ এর সদস্য (সিনিয়র সচিব) জনাব এম এ আকমল হোসেন আজাদ, পুলিশ সুপার জনাব ড. এস এম ফরহাদ হোসেন, পার্বত্য চট্রগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগ, রাঙ্গামাটি এর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জনাব এস এম সাজ্জাদ হোসেন, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার বন সংরক্ষক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল সরকার, সিভিল সার্জন ডা: নুয়েন খীসা, জেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ উপস্থিত ছিলেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাব মোকাবেলায় বৃক্ষরোপণের কোনো বিকল্প নেই, আমাদের দেশে দিন দিন জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু বৃক্ষ দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। তাই নতুন বনাঞ্চল সৃষ্টি করতে না পারলেও অন্তত সংরক্ষিত বনাঞ্চল যাতে কমে না যায় সে লক্ষ্যে আমাদের বৃক্ষরোপণের কোন বিকল্প নেই। পার্বত্য অঞ্চল বাংলাদেশে বন বিভাগ তথা বনায়নের সবচেয়ে বড় এলাকা, এই বনায়ন রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। বনায়ন শুধু পরিবেশ রক্ষা করেনা বরং আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক ধরনের ঔষধি কাজেও অনেক বৃক্ষ আমরা ব্যবহার করে থাকি। তাই বৃক্ষরোপণে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করে বনায়নকে সমৃদ্ধ করার জন্য বক্তারা আহবান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে, মাননীয় উপদেষ্টা বলেন, পার্বত্য চট্রগ্রামে যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে বর্তমানে আঁশির দশকের মতো কোনো বনাঞ্চল চোখে পড়েনা, আগে যেখানে বন জঙ্গল ছিল এখন সেখানে গাড়ি চলে। আমরা বনাঞ্চলকে ধ্বংস করে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত, তাই বনাঞ্চল কর্তৃপক্ষকে এসবের দায় নিতে হবে উল্লেখ করে তাদেরকে আরো সচেতন থাকার আহবান জানান। আমরা সবাই বনায়ন নিয়ে ভাবি কিন্তু কেউ বনাঞ্চল নিয়ে কাজ করিনা। তিনি বন বিভাগ কর্তৃক বনাঞ্চলে সেগুন কাঠের পরিবর্তে অন্য গাছ রোপণের তাগিত দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, শুধুমাত্র নিষেধাজ্ঞা দিলে হবেনা তার বিকল্প আমাদের বের করা দরকার। পরিকল্পনা মোতাবেক বনাঞ্চল সংরক্ষণ করতে না পারলে আমরা পরিবেশগতভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার পাশাপাশি আর্থিকভাবে ও ক্ষতির সম্মুখীন হবো। তিনি আরো বলেন, কাপ্তাই লেকসহ বনায়নকে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা পার্বত্য অঞ্চলের মানুষেরা ভালো করে জানে, তাই তাদেরকে এসব কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করার আহবান করার পাশাপাশি বন বিভাগ কর্তৃক প্রকাশিত বইয়ের একটি অংশে, উপজাতিরা পাহাড়ে পশু শিকারকে পেশা হিসেবে নিয়েছে উল্লেখ করা হয়। তিনি এই বক্তব্যের সমালোচনা করেন এবং বন বিভাগকে এসব বিষয়ে সতর্ক থাকা এবং পরিকল্পনা মোতাবেক কাজ করার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মেলা উপলক্ষ্যে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি জেলা প্রশাসক কার্যালয় হতে শুরু হয়ে জিমনেশিয়াম মাঠ প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। প্রধান অতিথি পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব সুপ্রদীপ চাকমা ফিতা কাটিয়ে ও বেলুন উড়িয়ে উক্ত মেলার শুভ উদ্বোধন করেন। অনুষ্টান শেষে অতিথিবৃন্দ শিক্ষার্থীদের মাঝে চারাগাছ বিতরণ করেন ও মেলা উপলক্ষ্যে স্থাপিত চারা গাছের নার্সারি স্টলগুলো পরিদর্শন করেন এবং বৃক্ষরোপণে অংশগ্রহণ করেন। মেলার সার্বিক নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
২০২৫ এর এই মেলাটি আগামী ৮ ই আগস্ট পর্যন্ত চলমান থাকবে
Leave a Reply