শিরোনাম :
আওরঙ্গজেব কামাল : জুলাইয়ের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে বড় পরিবর্তন এসেছে, কিন্তু মাঠের সাংবাদিকদের ভাগ্যে সে পরিবর্তনের ছোঁয়া আসেনি। সাংবাদিকতার পাতায় ঝুঁকির দাম আছে, কিন্তু সুফলের কোনো নিশ্চয়তা নেই। স্বাধীনতা ও সত্যের অনুসন্ধানে থাকা অনেক সাংবাদিক আজও জীবন দিতে বাধ্য হচ্ছেন। সত্য উদঘাটনের পথে সাংবাদিকদের জীবনের ঝুঁকি এখনো প্রতিকারহীন থেকে গেছে। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান দেশের রাজনৈতিক নকশা বদলে দিলেও সাংবাদিকদের জন্য সে অভিজ্ঞতা রেখে গেছে অনিশ্চয়তা ও ঝুঁকির বাস্তবতা। হামলা, গ্রেপ্তার, অনিচ্ছাকৃত সাইট বন্ধ, ও অর্থনৈতিক চাপে মাঠপর্যায়ের সাংবাদিকরা আজ দিশেহারা। তাদের অভিযোগ—অভ্যুত্থান আমাদের নিরাপত্তা বাড়ায়নি, বরং আরও বিপন্ন করে দিয়েছে। সরকারের কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জন্য কোনো সুস্পষ্ট নীতিমালা বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। ফলে সাংবাদিকতা এখন দীর্ঘমেয়াদি এক ঝুঁকিপূর্ণ পেশা। অগাস্ট ২০২৪ থেকে জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত সময়ে ৮৭৮ জন সাংবাদিক হামলা, লাঞ্ছনা, মিথ্যা মামলা বা নানা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। শুধু ২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসেই ২৭৪টি হামলার ঘটনা ঘটেছে, যেখানে আহত হয়েছেন ১২৬ জন সাংবাদিক। অনেক সাংবাদিক এখনো কারাগারে বন্দি রয়েছেন। যেমন—মিরপুরের এশিয়ান টিভির প্রতিবেদক মোঃ উদ্দিন, যিনি বর্তমানে কাশেমপুর কারাগারে রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকলেও পুলিশ তাকে আটক করে ছাত্রলীগ নেতা পরিচয়ে হাজতে পাঠিয়েছে। তার ভাই মোঃ নিজামউদ্দিন, দৈনিক মাতৃজগতের প্রতিনিধি, তাকেও মিথ্যা মামলায় আটক করা হয়েছে। আশুলিয়া ও অন্যান্য এলাকায়ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অহেতুক মামলা, হয়রানি ও হুমকির ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন খবর সংগ্রহকারী সাংবাদিকরাই খবরে পরিণত হচ্ছেন। দেশে সাংবাদিক নির্যাতনের পরিসংখ্যান দিন দিন বেড়েই চলেছে। ভয়ভীতি, হুমকি, মামলা, শারীরিক নির্যাতন, গুম কিংবা খুন—সব ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরা। অথচ সেই অনুপাতে বিচার হচ্ছে না। ফলে সাংবাদিক হত্যার বিচার না হওয়ায় অপরাধীদের দুঃসাহস বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নীরব ভূমিকা এবং বিচারিক জটিলতার কারণে ‘বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে’। আইনের শাসনের অভাব সাংবাদিকদের নিরাপত্তাকে আরও দুর্বল করে তুলেছে। সাংবাদিকদের জীবনে স্থিতি বা নিরাপত্তা নেই বললেই চলে। গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করা, পারিবারিক জীবন থেকে দূরে থাকা—এসব যেন তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। অথচ সমাজে তাদের যথাযথ মূল্যায়ন হয় না। তারা মানবকল্যাণ ও সমাজকল্যাণে নিয়োজিত থাকলেও রাষ্ট্র তাদের প্রতি উদাসীন। তরুণ প্রজন্মের অনেক মেধাবী সাংবাদিক আজ নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। রাষ্ট্র যদি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়, তবে গণতন্ত্রের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়বে। কারণ সাংবাদিকরাই জাতির তথ্যপ্রবাহের শিরদাঁড়া। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এক নতুন সংকট—ভুয়া সাংবাদিকতার বিস্তার। আজকাল অনেকেই সাংবাদিকতার মৌলিক জ্ঞান বা শিক্ষা ছাড়াই প্রেস লেখা ব্যাজ গলায় ঝুলিয়ে মোটরসাইকেলে ঘুরছেন। কেউ মুদির দোকানি, কেউ ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক, কেউবা অন্য পেশার মানুষ—কিন্তু নিজেদের সাংবাদিক পরিচয়ে প্রতারণা ও চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়ছেন। এদের অনেকেই বুম হাতে, গলায় মাইক্রোফোন ঝুলিয়ে মাঠে নামে, অথচ তাদের পরিচয়পত্র ও যোগ্যতা দেখলে অবাক হতে হয়। এসব ভূয়া সাংবাদিকের অপকর্মের কারণে প্রকৃত পেশাদার সাংবাদিকরা পড়ছেন মারাত্মক বিড়ম্বনায়, এবং পেশার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। দুঃখজনকভাবে সাংবাদিক সমাজের ভেতরেও বিভাজন রয়েছে। সিনিয়র সাংবাদিকরা অনেক সময় জুনিয়রদের অবমূল্যায়ন করেন। কেউ কেউ পেশাকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করেন। এই বিভাজন সাংবাদিকতার শক্তি কমিয়ে দিচ্ছে। নিজেদের মধ্যে বিভাজন দূর না করলে সাংবাদিক সমাজ কখনোই নিরাপদ ও ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে না। এখন সময় এসেছে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষ ভূমিকা, সাংবাদিক নির্যাতনের বিচার, ও ভুয়া সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য। একই সঙ্গে পেশাগত নৈতিকতা, প্রশিক্ষণ ও সম্পাদকীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। গণতন্ত্রের ভিত শক্ত করতে হলে তথ্যপ্রবাহ মুক্ত রাখতে হবে, আর তথ্যপ্রবাহের রক্ষক সেই সাংবাদিকরা যদি নিজেরাই অনিরাপদ থাকেন, তবে সমাজও অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। একটি গণঅভ্যুত্থান রাষ্ট্রের কাঠামো বদলে দিতে পারে, কিন্তু সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত না হলে গণতন্ত্রের ভিত্তিই দুর্বল হয়ে যাবে। তাই এখন সময় এসেছে শুধু শব্দে নয়, কাজে দেখানোর—সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের নৈতিক, সাংবিধানিক ও মানবিক দায়িত্ব। আওরঙ্গজেব কামাল লেখক ও গবেষক সভাপতি, ঢাকা প্রেস ক্লাব গাজীপুরের শ্রীপুরে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‍্যালি গৌরীপুরে বিএনপিতে শৃঙ্খলা রক্ষায় বড় পদক্ষেপ পাঁচ নেতা পদ ও সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার গৌরীপুরে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল রক্তক্ষয়ী রূপ নিল গলাচিপায় তিন দফা দাবিতে প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি রাজশাহীতে অপারেশনস্ ফার্স্ট লাইট অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র, মাদকদ্রব্য ও মোটরসাইকেল উদ্ধার: গ্রেফতার: ১৩ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) দুই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) পদে রদবদল করা হয়েছে। যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা আসন্ন ১৪ ডিসেম্বর “শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস ২০২৫ ” এবং ১৬ ডিসেম্বর “মহান বিজয় দিবস-২০২৫” যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের উপলক্ষ্যে আজ চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে এক প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয় ৯ই নভেম্বর সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। গীতিকবি এম আর মনজু’র ৭০ তম জন্মদিন আজ ( ১০ নভেম্বর ২০২৫ ) পুঠিয়া দুর্গাপুর -৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে স্বামীকে হত্যা মামলায় নাসরিন বেগম (৩৮) নামের এক নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, একাধিক আসামী পলাতক চট্টগ্রামের মুরাদপুরে আজ রোববার সকালে মিছিল করেছে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ। এসময় ধাওয়া দিয়ে তিনজন ছাত্রলীগ কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সুন্দরগঞ্জে জামায়াত কর্মী হত্যা মামলায় সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য নাদিম গ্রেফতার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ এ মুশফিকুর রহমানের নির্দেশে বিএনপির লিফলেট বিতরণে গণজোয়ার ব্রাক্ষণবাড়িয়া-৫ নবীনগর আসনের মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন গোপালপুরে শিক্ষকের শিক্ষক প্রয়াত অধ্যাপক বাণীতোষ চক্রবর্তীর স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত মাদারগঞ্জে আ’লীগ নেত্রী আরিফা ইয়াসমিন ময়ুরীকে গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন নাটোরে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ ইউনিয়ন জামায়াত সেক্রেটারির বিরুদ্ধে

চাল ডাল তেল আলু পিয়াজ রসুন আদা জিরা সহ সকল খাদ্যদ্রব্য এর মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ বাজার সিন্ডিকেট ধ্বংস করে জিনিসপত্র জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

রফিকুল ইসলাম রাজা
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ১৬৯ বার পঠিত

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ এর ৫০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে

জাসদ ঢাকা মহানগর পশ্চিম এর আওতায়ধীন মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানা

লিফলেট বিতরণ ও বিক্ষোভ মিছিল এবং মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়ে।

 

আজ ১০ই সেপ্টেম্বর ২০২২, সকাল ১১ টায়,

রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট প্রাঙ্গনে

জাসদ ঢাকা মহানগর পশ্চিমের সহ-সভাপতি ও মোহাম্মদপুর আদাবর থানার সমন্বয়ক এ বি এম জিয়াউল হক বাচ্চু এর সভাপতিত্বে

 

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন

জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর পশ্চিমের সভাপতি মোহাম্মদ নুরুন্নবী।

আরো বক্তব্য রাখেন

জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক ‌ও ঢাকা মহানগর পশ্চিমের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুল, জাসদ ঢাকা মহানগর পশ্চিমের সহ-সভাপতি

মোঃ মনির হোসেন ও অ্যাডভোকেট আবু হানিফ, জাসদ ঢাকা মহানগর পশ্চিমের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় প্রগতিশীল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রাজা, জাসদ ঢাকা মহানগর পশ্চিমের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইউনুস, প্রচার সম্পাদক দেওয়ান মোহাম্মদ আলী জুয়েল, দপ্তর সম্পাদক শেখ হাসান,আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট আশরাফ খান লেলিন, নারী বিষয়ক সম্পাদক পারভেজ আক্তার শিল্পী, শ্রমও বিষয়ক সম্পাদক শিরিন শিকদার, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক টিপু সুলতান, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, সহ-সম্পাদক আলমগীর হোসেন, সিমা আক্তার সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

আওরঙ্গজেব কামাল : জুলাইয়ের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে বড় পরিবর্তন এসেছে, কিন্তু মাঠের সাংবাদিকদের ভাগ্যে সে পরিবর্তনের ছোঁয়া আসেনি। সাংবাদিকতার পাতায় ঝুঁকির দাম আছে, কিন্তু সুফলের কোনো নিশ্চয়তা নেই। স্বাধীনতা ও সত্যের অনুসন্ধানে থাকা অনেক সাংবাদিক আজও জীবন দিতে বাধ্য হচ্ছেন। সত্য উদঘাটনের পথে সাংবাদিকদের জীবনের ঝুঁকি এখনো প্রতিকারহীন থেকে গেছে। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান দেশের রাজনৈতিক নকশা বদলে দিলেও সাংবাদিকদের জন্য সে অভিজ্ঞতা রেখে গেছে অনিশ্চয়তা ও ঝুঁকির বাস্তবতা। হামলা, গ্রেপ্তার, অনিচ্ছাকৃত সাইট বন্ধ, ও অর্থনৈতিক চাপে মাঠপর্যায়ের সাংবাদিকরা আজ দিশেহারা। তাদের অভিযোগ—অভ্যুত্থান আমাদের নিরাপত্তা বাড়ায়নি, বরং আরও বিপন্ন করে দিয়েছে। সরকারের কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জন্য কোনো সুস্পষ্ট নীতিমালা বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। ফলে সাংবাদিকতা এখন দীর্ঘমেয়াদি এক ঝুঁকিপূর্ণ পেশা। অগাস্ট ২০২৪ থেকে জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত সময়ে ৮৭৮ জন সাংবাদিক হামলা, লাঞ্ছনা, মিথ্যা মামলা বা নানা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। শুধু ২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসেই ২৭৪টি হামলার ঘটনা ঘটেছে, যেখানে আহত হয়েছেন ১২৬ জন সাংবাদিক। অনেক সাংবাদিক এখনো কারাগারে বন্দি রয়েছেন। যেমন—মিরপুরের এশিয়ান টিভির প্রতিবেদক মোঃ উদ্দিন, যিনি বর্তমানে কাশেমপুর কারাগারে রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকলেও পুলিশ তাকে আটক করে ছাত্রলীগ নেতা পরিচয়ে হাজতে পাঠিয়েছে। তার ভাই মোঃ নিজামউদ্দিন, দৈনিক মাতৃজগতের প্রতিনিধি, তাকেও মিথ্যা মামলায় আটক করা হয়েছে। আশুলিয়া ও অন্যান্য এলাকায়ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অহেতুক মামলা, হয়রানি ও হুমকির ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন খবর সংগ্রহকারী সাংবাদিকরাই খবরে পরিণত হচ্ছেন। দেশে সাংবাদিক নির্যাতনের পরিসংখ্যান দিন দিন বেড়েই চলেছে। ভয়ভীতি, হুমকি, মামলা, শারীরিক নির্যাতন, গুম কিংবা খুন—সব ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরা। অথচ সেই অনুপাতে বিচার হচ্ছে না। ফলে সাংবাদিক হত্যার বিচার না হওয়ায় অপরাধীদের দুঃসাহস বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নীরব ভূমিকা এবং বিচারিক জটিলতার কারণে ‘বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে’। আইনের শাসনের অভাব সাংবাদিকদের নিরাপত্তাকে আরও দুর্বল করে তুলেছে। সাংবাদিকদের জীবনে স্থিতি বা নিরাপত্তা নেই বললেই চলে। গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করা, পারিবারিক জীবন থেকে দূরে থাকা—এসব যেন তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। অথচ সমাজে তাদের যথাযথ মূল্যায়ন হয় না। তারা মানবকল্যাণ ও সমাজকল্যাণে নিয়োজিত থাকলেও রাষ্ট্র তাদের প্রতি উদাসীন। তরুণ প্রজন্মের অনেক মেধাবী সাংবাদিক আজ নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। রাষ্ট্র যদি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়, তবে গণতন্ত্রের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়বে। কারণ সাংবাদিকরাই জাতির তথ্যপ্রবাহের শিরদাঁড়া। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এক নতুন সংকট—ভুয়া সাংবাদিকতার বিস্তার। আজকাল অনেকেই সাংবাদিকতার মৌলিক জ্ঞান বা শিক্ষা ছাড়াই প্রেস লেখা ব্যাজ গলায় ঝুলিয়ে মোটরসাইকেলে ঘুরছেন। কেউ মুদির দোকানি, কেউ ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক, কেউবা অন্য পেশার মানুষ—কিন্তু নিজেদের সাংবাদিক পরিচয়ে প্রতারণা ও চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়ছেন। এদের অনেকেই বুম হাতে, গলায় মাইক্রোফোন ঝুলিয়ে মাঠে নামে, অথচ তাদের পরিচয়পত্র ও যোগ্যতা দেখলে অবাক হতে হয়। এসব ভূয়া সাংবাদিকের অপকর্মের কারণে প্রকৃত পেশাদার সাংবাদিকরা পড়ছেন মারাত্মক বিড়ম্বনায়, এবং পেশার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। দুঃখজনকভাবে সাংবাদিক সমাজের ভেতরেও বিভাজন রয়েছে। সিনিয়র সাংবাদিকরা অনেক সময় জুনিয়রদের অবমূল্যায়ন করেন। কেউ কেউ পেশাকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করেন। এই বিভাজন সাংবাদিকতার শক্তি কমিয়ে দিচ্ছে। নিজেদের মধ্যে বিভাজন দূর না করলে সাংবাদিক সমাজ কখনোই নিরাপদ ও ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে না। এখন সময় এসেছে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষ ভূমিকা, সাংবাদিক নির্যাতনের বিচার, ও ভুয়া সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য। একই সঙ্গে পেশাগত নৈতিকতা, প্রশিক্ষণ ও সম্পাদকীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। গণতন্ত্রের ভিত শক্ত করতে হলে তথ্যপ্রবাহ মুক্ত রাখতে হবে, আর তথ্যপ্রবাহের রক্ষক সেই সাংবাদিকরা যদি নিজেরাই অনিরাপদ থাকেন, তবে সমাজও অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। একটি গণঅভ্যুত্থান রাষ্ট্রের কাঠামো বদলে দিতে পারে, কিন্তু সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত না হলে গণতন্ত্রের ভিত্তিই দুর্বল হয়ে যাবে। তাই এখন সময় এসেছে শুধু শব্দে নয়, কাজে দেখানোর—সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের নৈতিক, সাংবিধানিক ও মানবিক দায়িত্ব। আওরঙ্গজেব কামাল লেখক ও গবেষক সভাপতি, ঢাকা প্রেস ক্লাব

এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com