শিরোনাম :
চলো যায় পদ্মা বাঁচাই ,পদ্মার পানি বণ্টনের দাবিতে শিবগঞ্জে বি এন পি আয়োজনে বিশাল সমাবেশ ময়মনসিংহে শিয়ালের আক্রমণে নারী ও পুরুষ সহ আহত ২০ জন । পটুয়াখালী-৩ আসনে হাসান মামুনকে প্রার্থী না করায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ রিটা রহমানকে বিএনপির নমিনেশনের দাবিতে রংপুরে বিক্ষোভ হঠাৎ রেল লাইনের উপর ভেঙ্গে পড়ল ট্রেনের যন্ত্রাংশ , পাথরের আঘাতে আহত গেটম‍্যান ও পথচারীরা আটঘরিয়ায় পাটবীজ উৎপাদনকারি চাষি প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত সানজিদা ইসলাম তুলি: এক সাহসী বোনের আন্দোলন, এক জাতির বিবেকের জাগরণ শত বছরের পুরাতন পুকুর ভরাটে প্রশাসনের নীরবতা, ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকাবাসী। আখাউড়ায় ৫৪৫ পিস ইয়াবাসহ এক মাদক কারবারি গ্রেফতার ঝিনাইদহ -০৪ আসনে কালীগঞ্জের মাটিতে অতিথি পাখির ঠাই নাই বললেন স্থানীয় নেতাকর্মী

ধর্ষণের ভিডিও ফাঁসের ভয় দেখিয়ে ৩ বছর ধরে শিক্ষার্থীকে শিক্ষকের ধর্ষন- নির্যাতন

মারুফ আহমেদ 
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৩০ জুলাই, ২০২২
  • ১৯৪ বার পঠিত

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বাটুপাড়া কারিগরি ও বাণিজ্যিক ইনস্টিটিউটের ‘”ড্রেস মেকিং এন্ড টেইলারিং’ ট্রেডের” এক শিক্ষক একই গ্রুপের এক ছাত্রীকে নানা প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তিন বছরেরও অধিক সময় ধরে ধর্ষণ ও নির্যাতন করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (২৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরইউজে) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী (২৪) অভিযুক্ত শিক্ষক মাসুদ সরকারের (৪৭) বিরুদ্ধে যৌন লালসার এমন পৈশাচিকতা তুলে ধরেন ভুক্তভোগী ও তার সজনেরা।

শুধু ওই ছাত্রীই নন; তার মত আরও ৮-১০ জন অসহায় ছাত্রীকে এমন স্বর্বশান্তের চেষ্টা করেন লম্পট ওই শিক্ষক। ভুক্তভোগী ছাত্রী সংবাদ সম্মেলনে নিজেসহ ওই ৮-১০ জন ছাত্রীর সঙ্গে শিক্ষক মাসুদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার কথোপকথনের রেকর্ড উপস্থাপন করেন। অভিযুক্ত শিক্ষক উপজেলার মৌগাছি ইউনিয়নের বাটুপাড়া গ্রামের মৃত ছিদ্দিক সরকারের ছেলে এবং ওই ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আরজেদ সরকারের চাচাতো ভাই।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, ২০১৯ জানুয়ারিতে তিনি ওই প্রতিষ্ঠানে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। এর আগে তার জীবনের নানা উত্থান-পতনের করুণ কাহিনী ঘটে গেছে বলে জানান। তাই তিনি কারিগরি থেকে পড়ালেখা করে নিজে প্রতিষ্ঠিত হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠানের ‘ড্রেস মেকিং এন্ড টেইলারিং’ ট্রেড এর শিক্ষক মাসুদের যৌন লালশার শিকার হয়ে তার জীবনটা তছনছ হয়ে গেছে।

ভুক্তভোগী ছাত্রী আরো বলেন, ‘শিক্ষক মাসুদের বাড়ির পাশেই বাবার বাড়ি। তাই আমার পরিবারের সঙ্গে মাসুদের সখ্যতা পুরনো। আমি সেখানে ভর্তি হওয়ার পর শিক্ষক মাসুদ প্রায়ই বাড়িতে আসতো। ২০১৯ সালের ১০ মে বেলা অনুমানিক আড়াইটার দিকে আমাকে নোট দিবেন বলে মোবাইলে কল দিয়ে তার বাসায় আসতে বলেন। শিক্ষক চাচার ফোন কল পেয়ে আমি তার বাড়িতে যাই। তিনি বাড়ির বাহিরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমাকে দেখে বলেন, দোতলায় তার শোবার ঘরে নোট গুলি রাখা আছে নিয়ে আসতে। আমি তার দুরভিসন্ধি বুঝতে না পেরে সরল বিশ্বাসে নোটস আনতে দোতলায় শোবার ঘরে গেলে তিনি চুপিচুপি আমার পিছু নিয়ে ঘরে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে দিয়ে আমাকে পেছন থেকে জাপটে ধরে। আমাকে তার বিছানায় ফেলে দেয়। আমি চিৎকার চেচামেচি করলে আমার মুখের ভেতর কাপড় গুজে দেয় তার বাড়ির জানালা গ্লাসের হওয়ায় এবং বাড়িতে কেউ না থাকায় লম্পট শিক্ষক জোরপূর্বক ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাকে ধর্ষণ করে। তার শোবার ঘরে আগে থেকে ফিট করে রাখা ফোনে আমাকে ধর্ষণের ভিডিও ধারন করে। আমি ঘটনাটি আমার বাবা-মাকে জানাতে চাইলে শিক্ষক মাসুদ তার মোবাইলে রেকর্ড করা আমার অশ্লীল ভিডিও দেখায় এবং বলে তুই কাউকে আজকের ঘটনা জানালে আমি এটা ফেসবুকে ভাইরাল করে দিব। আমি মান-সম্মানের ভয়ে সেদিনের ঘটনা চেপে যাই এবং অসুস্থ হয়ে পড়ি। কিছুদিন পর সে আমাকে মোবাইলে কল করে বলে আমার কথা মত না চললে তোর দেহে (ধড়ে) মাথা থাকবে না। মাসে তিন দিন আমার সাথে মেলামেশা করতে হবে এবং তুই বাধ্য। যদি আমার সাথে তুই মেলামেশা না করিস তাহলে তোর তথ্য ব্যানবেইজ এ পাঠাবোনা। এভাবে সে আমাকে প্রতিনিয়ত ব্ল্যাকমেইলিং করতে থাকে।’

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ছাত্রী আরও বলেন, ‘এভাবে তার ধর্ষণ-অত্যাচার থেকে বাঁচতে আমি ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে গাজীপুরের একটি গার্মেন্টস্ এ চাকরি করা শুরু করি। কিন্তু সেখানে গিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। আমার মামাতো বোনের নিটক থেকে ঠিকানা নিয়ে ৯ সেপ্টেম্বর বিকালে গাজীপুরে এসে আমাকে ফোন দিয়ে এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র, জন্ম তারিখ ও নাম-ঠিকানা সংশোধনের জন্য দেখা করতে বলে। এমনকি ধর্ষণের ভিডিও ফোন থেকে ডিলিট করে দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয়। আমি আবারো সরল বিশ^াসে তার সঙ্গে দেখা করি। সে ঢাকা শিক্ষা অফিসে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কক্সবাজারে নিয়ে যায়। বুঝতে পারার পর আমি তার সাথে প্রচণ্ড রাগারাগি করি। এক পর্যায়ে সে বলে, আমার সাথে তিন দিন হোটেলে থাকলে পূর্বের ভিডিও ডিলিট করার পাশাপাশি কোনোদিন যৌনাচারে লিপ্ত হবে না বলে জানায়। একপর্যায়ে সে কক্সবাজারের একটি হোটেলে তিনদিন ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। শেষের তিন তার হাত থেকে ফোন জোরপূর্বক নিয়ে প্রথম দিনের ধর্ষণের ভিডিও ডিলিট করে বাড়ি এসে আবারো পড়ালেখা শুরু করি। আনুমানিক ১৫ দিন অন্তর মাসুদ আবারো উত্যক্ত শুরু করে। ধর্ষণের কুপ্রস্তাব দিয়ে পূর্বের অন্য কোথায় সংরক্ষিত রেখে সেটি আমাকে দেখিয়ে নেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়

তিনি আরও বলেন, ২০২১ সালে আমি এসএসপি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি। কিন্তু একটি বিষয়ে (ড্রেস মেকিং এন্ড টেইলারিং) বিষয়ে আমাকে ফেল করিয়ে দেয়। সর্বশেষ গত ৮ ফেব্রুয়ারি আমাকে ধর্ষণের ভিডিওসহ যত রকমের ডকুমেন্ট আছে সব মুছে ফেলার কথা বলে কৌশলে রাজশাহীর একটি হোটেলে নিয়ে এসে আবারো জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। কিন্তু ওইদিনও সেই ভিডিও ডিলিট করেনি। এভাবে দিনের পর দিন ধর্ষণের ভিডিও ফাঁসের ভয় দেখিয়ে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। তার অত্যাচার সইতে না পেরে তার মোবাইল নম্বর, ফেসবুক আইডি ব্লক দিয়ে যোগাযেগ বন্ধ করে দেই।

সর্বশেষ ৮ জুন সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয়ে আমবাগানের দিকে যাচ্ছিলাম। তখন মাসুদ তার দূর সম্পর্কেও এক আত্মীয়ের বাড়ির দরজায় ওঁৎ পেতে থেকে আমার হাত থেকে মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিয়ে ঘরের ভেতর ঢুকে যায়। আমি ফোন নেয়ার জন্য ঘরের দরজায় গেলে জোরপূর্বক ঘরের ভেতরে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাসুদসহ পরিবারের সদস্যরা আমাকে ও বাবা-মাকে মেরে আহত করে। এই ঘটনায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে ইউএনও, এসপি, কলেজের অধ্যক্ষের নিকট ধর্ষণ-অত্যাচারের বিচার চেয়েও পাইনি। বাধ্য হয়ে গত ৩ জুলাই কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগসহ একই দিনে রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন আদালত-২ এ মামলা করি। প্রধানমন্ত্রীর নিকট একজন শিক্ষকের ধর্ষণ-অত্যাচারের বিচার চাই।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও এক ছাত্রী বলেন, ‘আমাকেও একইভাবে সহযোগিতা করার কথা বলে কুপ্রস্ত

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com