শিরোনাম :
মনপুরায় জেলেকে নৌকার দাদন টাকা নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৩ মনপুরায় জমি বিরোধকে কেন্দ্র করে গরু ঘরে অগ্নিসংযোগ, আতঙ্কে স্থানীয়রা বর্তমান সংকটের সমাধান নবীজির শিক্ষা সম্পাদকীয় আজ ১২ রবিউল আউয়াল, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। দিনটি বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর জন্য পবিত্র, অনন্য ও শিক্ষণীয়। এ দিনে জন্ম নেন বিশ্বমানবতার আলোকবর্তিকা হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং একই দিনে তিনি পৃথিবী ত্যাগ করেন। নবীজির আগমন ছিল মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরিবর্তনের সূচনা। তাঁর জীবন ও শিক্ষা আজও যুগে যুগে প্রাসঙ্গিক বিশেষ করে আমাদের বর্তমান সময়ে।বাংলাদেশ আজ গভীর অন্ধকারে নিঃশ্বাস ফেলছে। চারপাশে ছড়িয়ে আছে বিভাজন, হানাহানি, দুর্নীতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা, আর নৈতিক অবক্ষয়। সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত জীবনের মৌলিক নিরাপত্তা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত। দোকানের তাক থেকে চাল, ডাল, তেল—প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। কৃষক ফসল বিক্রি করতে পারছেন না, শ্রমিক ঘাম ঝরিয়েও ন্যায্য মজুরি পাচ্ছেন না। তরুণ প্রজন্ম কাজের অভাবে হতাশ, শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসাত্মক সংকটের মুখোমুখি। এর সঙ্গে জুড়ে গেছে মাদক, অপরাধ ও সহিংসতার প্রলয়।এই সংকটে আমরা ভুলে যাই সেই আলোর পথে, যিনি মানবজাতিকে অন্ধকার থেকে মুক্ত করেছিলেন—রাসূলুল্লাহ হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি এসেছিলেন এমন এক সমাজে, যেখানে গোত্রবিভাজন, মিথ্যা, নারীর অবমাননা, দারিদ্র্য, নিপীড়ন ও সহিংসতা ছিল নিত্যদিনের বাস্তবতা। তিনি আমাদের দেখিয়েছিলেন সত্য, ন্যায়, দয়া ও মানবতার পথ। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “মানুষের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে অন্যের জন্য সবচেয়ে বেশি কল্যাণ বয়ে আনে।” আজকের বাংলাদেশে যদি আমরা তাঁর এই শিক্ষার অনুসরণ করি, তবে সমাজে স্বার্থপরতা, দুর্নীতি ও বৈষম্য দূর করা সম্ভব।সাংবাদিকরা যখন সত্য প্রকাশের জন্য নির্যাতনের মুখোমুখি হন, তখন নবীজির শিক্ষা আমাদের শেখায়—সত্যের পথে থাকা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সাহসী হওয়া। তিনি বলেছেন, “সর্বশ্রেষ্ঠ জিহাদ হলো অন্যায় শাসকের সামনে সত্য কথা বলা।” সাংবাদিকরা দেশের ন্যায়বিচার রক্ষায় যে ভূমিকা রাখেন, তা নবীজির দৃষ্টিকোণ থেকে সত্যিই মহৎ।রাজনীতিতেও আমাদের শিক্ষা প্রয়োজন। ক্ষমতার জন্য লড়াই, প্রতিশোধ, হিংসা—এগুলো জাতিকে ক্ষয় করছে। অথচ নবীজি মক্কা বিজয়ের দিন শত্রুকেও ক্ষমা করেছিলেন। আজকের নেতারা যদি তাঁর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতেন, সংলাপ ও ক্ষমাশীলতার মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যেত।অর্থনীতি এবং শ্রমিক অধিকারেও নবীজির শিক্ষা অসাধারণ। তিনি বলেছেন, “শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগে তার মজুরি প্রদান করো।” শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা, কৃষকের ফসলের সঠিক দাম, প্রবাসীর রেমিট্যান্সের মর্যাদা—এসবই নবীজির শিক্ষার বাস্তবায়ন।নবীজির জীবন থেকে আমরা আরও শিখি মানবিক সহমর্মিতা। তিনি শত্রুকেও ক্ষমা করেছিলেন, দুর্বলকে রক্ষা করেছিলেন। অথচ আমাদের সমাজে হিংসা, ঘৃণা, বৈষম্য বেড়েছে। দরিদ্র ও অসহায়দের প্রতি সহানুভূতি বাড়ানো, ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা—এসবই নবীজির শিক্ষা অনুযায়ী। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়া মানেই শুধু ধর্মীয় আচার পালন নয়; বরং তা সামাজিক ন্যায়বিচার, রাষ্ট্র পরিচালনা, অর্থনৈতিক ভারসাম্য ও মানবতার প্রতি দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠার আহ্বান। বর্তমান বৈশ্বিক অস্থিরতার যুগে এ শিক্ষা গ্রহণই পারে আমাদেরকে শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও মানবিকতার পথে এগিয়ে নিতে। আজ, ঈদে মিলাদুন্নবী আমাদের মনে করিয়ে দেয়—এই দিনটি কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং আত্মসমালোচনার দিন। যদি আমরা তাঁর জীবন ও শিক্ষাকে না বুঝি, তবে দুর্নীতি, সহিংসতা ও বৈষম্যের অন্ধকার থেকে বের হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু যদি আমরা সত্যিই তাঁর শিক্ষা অনুসরণ করি—রাজনৈতিক নেতৃত্ব, অর্থনীতি, সাংবাদিকতা, সাধারণ মানুষের জীবন সবক্ষেত্রে—তাহলে বাংলাদেশ হতে পারে শান্তি, ন্যায় ও সমৃদ্ধির দেশ। ঈদে মিলাদুন্নবী আমাদের কেবল ঐতিহাসিক স্মরণ নয়, বরং আত্মসমালোচনা ও কর্মপ্রেরণার দিন। নবীজির (সা.) শিক্ষা বাস্তবায়ন করলেই— রাজনৈতিক সংকট কাটবে ন্যায়ভিত্তিক নেতৃত্বের মাধ্যমে, সামাজিক অবক্ষয় রোধ হবে নৈতিকতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস পাবে সুষম বণ্টন ও জাকাত ব্যবস্থার মাধ্যমে, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা পাবে সহনশীলতা ও মানবপ্রেমের মাধ্যমে। আজকের আহ্বান: রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন যে—সংকটমুক্ত জাতি গড়ার একমাত্র পথ তাঁর জীবন ও শিক্ষার অনুসরণ। আমাদের প্রত্যেকের উচিত— রাজনৈতিক নেতা হোক ক্ষমাশীল ও ন্যায়পরায়ণ, অর্থনীতির নিয়ম হোক ন্যায্য ও বৈষম্যমুক্ত, সাংবাদিক হোক সাহসী ও সত্যনিষ্ঠ, সাধারণ মানুষ হোক সততা, সহনশীলতা ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর শিক্ষা—এটাই হতে পারে আমাদের দেশের অন্ধকার থেকে মুক্তির একমাত্র আলো। আমরা বিশ্বাস করি, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর শিক্ষা আজকের পৃথিবীতে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রয়োজন। যুদ্ধবিদ্ধস্ত বিশ্ব, বিভক্ত মুসলিম উম্মাহ, দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজ ও অস্থির তরুণ প্রজন্ম—সব সমস্যার সমাধান রয়েছে নবীজির দেখানো পথে। তাই আমাদের প্রতিজ্ঞা হওয়া উচিত, ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্র ও বিশ্ব রাজনীতি পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষা বাস্তবায়ন করা। কেবল তখনই মানবতা সত্যিকারের মুক্তি পাবে।আজকের পৃথিবী যেন নানা সংকটে ঘেরা—যুদ্ধ, দুর্নীতি, বৈষম্য, রাজনৈতিক অস্থিরতা, পরিবেশ বিপর্যয়, নৈতিক অবক্ষয়—এসব আমাদের সমাজকে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত করছে। মুসলিম বিশ্বও এ সংকট থেকে মুক্ত নয়। অথচ আমাদের সামনে রয়েছে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত—রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন ও শিক্ষা। রাসূলুল্লাহ (সা.) এমন এক যুগে আগমন করেছিলেন, যখন আরব সমাজ ছিল অন্ধকারে নিমজ্জিত। গোত্রবাদ, অবিচার, নারী নিপীড়ন, মিথ্যা প্রতিযোগিতা আর সহিংসতায় জর্জরিত ছিল গোটা সমাজ। ঠিক সেখানেই তিনি ন্যায়, সাম্য, দয়া, ভ্রাতৃত্ব আর মানবতার আলো জ্বালিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম, যে তার আচার-আচরণে উত্তম।” আজকের সমাজে এই বাণীই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন। বর্তমান সংকটে আমরা দেখি—ক্ষমত জাতীয়করণের দাবিতে রাজশাহীতে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের সমাবেশ খুলনায় সাংবাদিক বুলুর রহস্যজনক মৃত্যুর অধিকতর তদন্তের দাবিতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন সংবাদদাতা মোঃ রুবেল মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাংলাদেশ ন্যাশনাল নিউজ ক্লাব ও বাংলাদেশ ভূমিহীন গৃহহীন হাউজিং লিঃ উদ্যোগে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত রাঈবালীতা সাগরে ভাসতে থাকা অজ্ঞাত ব্যাক্তির লাশ উদ্ধার উলিপুরে মাদকবিরোধী অভিযানে সফল ওসি জিল্লুর রহমান। যশোরে সিআইডির ওপর হামলা গ্রেফতার ২, প্রধান আসামি তুষার এখনো পলাতক

সন্দ্বীপে “প্রাইম ” এর আলোয় আলোকিত হচ্ছে নারী ও কিশোর-কিশোরীরা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৮ মার্চ, ২০২১
  • ৭৮৬ বার পঠিত
সন্দ্বীপ প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস),চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলায় পিছিয়ে পড়া নারী ও কন্যা শিশুদের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে ও তাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ১৯৮৬ সাল থেকে নানামুখী প্রকল্প হাতে নিয়ে কাজ করে আসছে।আর এই বেসরকারী উন্নয়ন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন- দেশের নারী উন্নয়নের অগ্রদূত ও বিশিষ্ট নারী নেত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর।বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ,সন্দ্বীপ কেন্দ্রের বর্তমানে একটি চলমান প্রকল্পের নাম-” প্রমোটিং রাইটস্ থ্রো মবিলাইজেশন এন্ড এমপাওয়ারম্যান্ট সংক্ষেপে ” প্রাইম “।যা ২০১৮ সালের জুলাইতে কাজ শুরু করে।প্রাইম প্রকল্পের স্বপ্ন- সকল প্রকার বৈষম্য মুক্ত একটি সমাজ।আর অভীষ্ট হচ্ছে-ক্ষমতায়ন ও সামাজিক রূপান্তরের মাধ্যমে নারী- পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠা। প্রকল্পের লক্ষ্য – এমন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে যেখানে দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া নারীরা তাদের অধিকার রক্ষায় সামাজিক,রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারবে। যার উদ্দেশ্য হবে -(১) প্রকল্প এলাকার বঞ্চিত নারীরা সামাজিক,অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি করবে। এর সূচক হবে -(ক) সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা আদায়ের মাধমে ৩০% সেবা বৃদ্ধি পাবে।(খ) আয় বৃদ্ধি মুলক কাজে জড়িত হয়ে সদস্যদের ২০% আয় বৃদ্ধি পাবে।(২) প্রকল্প এলাকার নারী ও কন্যা শিশুরা,নারী ও কিশোরীদের উপর সহিংসতার বিরুদ্ধে সুরক্ষিত হবে। এর সূচক হবে -(ক) কর্ম এলাকায় ১০০ জন চেঞ্জমেকার তৈরী হবে।(খ) প্রতিটি স্কুলে যৌন হয়রানী প্রতিরোধ কমিটি সক্রিয় হবে।
সন্দ্বীপে নারী প্রগতি ‘ র প্রাইম প্রকল্পের কর্ম এলাকা- সারিকাইত,মাইটভাঙ্গা,মগধরা,মুছাপুর,রহমতপুর,হারামিয়া,বাউরিয়া ও পৌরসভা আংশিক।এ এলাকা গুলোর মধ্যে অবস্থিত কাজী আফাজউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়,সাউথ সন্দ্বীপ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়,
আবেদা ফয়েজ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,মাইটভাঙ্গা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়,বদিউজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয়,জেবেন্নুর সুলতান উচ্চ বিদ্যালয়,রহমতপুর উচ্চ বিদ্যালয়, এনাম নাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,দ্বীপবন্ধু মুস্তাফিজুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় ও বাউরিয়া জি,কে একাডেমী,এই ১০ টি বিদ্যালয়ে নারী প্রগতির প্রাইম প্রকল্প গঠন করেছে -১০ জনের একটি করে ‘ ইয়ুথ গ্রুপ ‘।
যার ৫ জন ছেলে, ৫ জন মেয়ে সদস্য। পড়ালেখার পাশাপাশি যাদের কাজ হচ্ছে – স্কুলের মেয়েদের ১৮ ও ২১ এর আগে বিয়ে নয় এই শ্লোগান কে সামনে রেখে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে সচেতন করা ও প্রতিরোধে সাধ্য মতো ভূমিকা রাখা। ইভটিজিং থেকে রক্ষা পেতে শিক্ষক,অভিভাবক,স্থানীয় জনপ্রতিনিধি প্রয়োজনে আইনী সহায়তার শরণাপন্ন হওয়া। এলাকায় নারীর প্রতি সহিংসতা হলে, তা বন্ধে রাস্ট্রীয় জরুরী সেবার সাহায্য নেয়া।
এ ব্যপারে রহমতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ইয়ুথ গ্রুপ সদস্য ফারিয়া ইয়াছমিন ইমু,মেহেরুন্নেছা সাদিয়া,সাবরিনা পারভীন তাসপিয়া, ফাহমিদা আলম পুস্প,বেলাল খান,জেবেন্নুর সুলতান উচ্চ বিদ্যালয়ের ইয়ুথ গ্রুপ সদস্য আশিকুল ইসলাম, শিমুল রায় ও দ্বীপবন্ধু মুস্তাফিজুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের ইয়ুথ গ্রুপ সদস্য নাজমুল আলম,কাজী আফাজউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ইয়ুথ গ্রুপের সদস্য কাজী ফাতিহা,কাজী নিজামউদ্দিন,হীরা বেগম এর সাথে কথা হয়। তারা এ প্রতিবেদক কে জানায়- গত বছর সন্দ্বীপের জেবেন্নুর সুলতান উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ‘ র উপর যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাদের ইয়ুথ গ্রুপের সদস্যরা সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে,স্কুলের শিক্ষার্থী-শিক্ষক-অভিভাবকদের নিয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন,যার ফলে প্রশাসনের টনক নড়ে এবং যৌন নির্যাতনকারী কে আটক করে এবং তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যাবস্থা নেয়। একই বছর রহমতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে অভিভাবকরা জোর পূর্বক বিয়ের আয়োজন করলে সন্দ্বীপ পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় সে বিয়ে ভেঙ্গে দেয়া হয়।
রহমতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সমুখ থেকে কিছু ইভটিজার কে পুলিশী সহায়তায় ধরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নিলে চেয়ারম্যান তাদের ভবিষতের জন্য শাসিয়ে তাদের অভিভাবকদের ডেকে মুচলেকার বিনিময়ে ছেড়ে দেন।কাজী আফাজউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ইয়ুথ গ্রুপের সদস্যরা বলেন- বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে স্কুলে আসা- যাওয়ার পথে একটি ছেলে ইভটিজিং করতো তাকে ইয়ুথ গ্রুপের সদস্যদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এলাকাবাসীর সহায়তায় শিক্ষকরা স্কুলে ধরে আনে, আবং পুলিশের হাতে তুলে দিবে বলে ভয় দেখায়। পড়ে ভবিষ্যতে সে আর এ কাজ করবে না বলে তার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। দ্বীপবন্ধু এম,আর উচ্চ বিদ্যালয়ের ইয়ুথ গ্রুপের সদস্যরা দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীর বাল্যবিবাহ ঠেকিয়ে দিয়েছে। তারা ঐ ছাত্রীর রেজিস্ট্রশন কার্ড নিয়ে অভিভাবকদের দেখিয়ে জানায় বিয়ে বন্ধ না করলে তারা আইন ও প্রশাসনের সহযোগিতা নেবেন।পরে অভিভাবকরা বিষয়টি বুঝতে পেরে মেয়েকে বিয়ে দেয়া থেকে সরে আসেন।বর্তমানে ঐ মেয়েটি মুস্তাফিজুর রহমান ডিগ্রী কলেজে ১ম বর্ষে পড়ছে।
ইয়ুথ গ্রুপের এ সকল তৎপরতায় একদিকে যেমন বাল্যবিবাহের প্রবনতা হ্রাস পাচ্ছে,অন্যদিকে যৌন নির্যাতন ও ইভটিজিং কারীরাও দমিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া যে কোনো প্রয়োজনে মানুষ সরকারী জরুরী সেবা সমুহের সাহায্যও নিচ্ছে,যা জনগনের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ার একটি ইতিবাচক দিক বলে ইয়ুথ গ্রুপের সদস্যরা মনে করে।নারী প্রগতির প্রাইম প্রজেক্টের ইয়ুথ গ্রুপের মতো প্রকল্প এলাকায় ২০ জনের এক একটি মহিলা সমিতি রয়েছে। মুছাপুর ৩ নং ওয়ার্ডের আহসান মিজির বাড়িতে এ রকম একটি সমিতির নাম ‘ দোয়েল নারী উন্নয়ন সমিতি ‘ এর সভাপতি আকতারা বেগম,সেক্রেটারী রোকসানা বেগম এবং ক্যাশিয়ার বিধবা সবুজা বেগম। সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে তারা এ প্রতিবেদককে জানায় – তারা নিভৃত পল্লীর দরিদ্র নারী।
নারী প্রগতি সংঘের প্রাইম প্রকল্পের সাথে থেকে তারা নারী অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করে সরকার প্রদত্ত বয়স্ক ভাতা,বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা সমিতির সদস্যদের মধ্যে যারা পাওয়ার যোগ্য তাদের জন্য আদায় করতে সক্ষম হয়েছেন। এতে করে তাদের ইউনিয়ন পরিষদের সাথে যোগাযোগ বেড়েছে। এ ছাড়া তারা ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে গবাদি পশু পালন,হাঁস-মুরগী পালন, বাঁশ-বেতের কাজ, হস্ত শিল্প সহ নানা আয় বর্ধক কাজের মাধ্যমে নিজেদের আর্থ -সামাজিক অবস্থার উন্নতিতে সচেষ্ট হচ্ছেন।এসডিজির শ্লোগান ” কেউ পিছিয়ে থাকবে না “, এ লক্ষে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে বদ্ধপরিকর তারা। বর্তমানে দোয়েল নারী উন্নয়ন সমিতির সদস্যদের দলীয় সঞ্চয় ২ লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে বলে তারা জানান।এ ছাড়া তাদের মধ্যে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সচেতনতাও আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা এখন করোনাকালীন সময়ে কী ভাবে হাত ধুতে হবে,বাহিরে গেলে মাস্ক পড়তে হবে। শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখতে হবে, বর্তমানে করোনা টিকা নেয়ার জন্য নারী প্রগতির প্রাইম প্রকল্পের কর্মীদের সহায়তায় অনলাইনে নিবন্ধন করতেও উৎসাহিত হচ্ছেন, মেয়েদের বাল্যবিবাহ না দিয়ে পড়ালেখায় উৎসাহিত করছেন।
এলাকার উঠতি যুবতী ও মধ্য বয়সী মহিলাদের জন্য নারী প্রগতি সংঘের এই প্রাইম প্রকল্প গত ২০১৯ সাল থেকে সেলাই প্রশিক্ষণের ব্যাবস্থা করে আসছে। সেলাই প্রশিক্ষণের সকল উপকরনের মাধ্যমে এ সংগঠনের শিবেরহাট কেন্দ্রে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারীতে প্রথম ব্যাচে ২৫ জন নারী কে দক্ষ কাটিং মাস্টার দ্বারা সেলাই প্রশক্ষণ দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে তাদের সনদ প্রদান ছাড়াও এককালীন নগদ ৩০০০ টাকা প্রদান করে। এ টাকার সাথে আরো কিছু টাকা যোগ করে সারিকাইত ৩ নং ওয়ার্ডের আবাসন কলোনীর ২ মেয়ে ১ ছেলের জননী নারী প্রগতির প্রাইম প্রকল্পের সেলাই প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নাজমা বেগম(৩৭) বর্তমানে সেলাই কাজ করে মাসে ৮/৯ হাজার টাকা রোজগার করছেন।
পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি করতে ও পরিবারের আয়-রুজি বাড়াতে বেকার স্বামীকে দিয়ে গত ১ বৎসরের মধ্যে একটি ছোটো-খাটো চায়ের দোকান পরিচারনা করছেন। বর্তমানে নাজমার পরিবারের আর্থিক অনিশ্চয়তা দুর হয়ে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠায় তারা খুশি।
নারী প্রগতির প্রাইম প্রকল্পের আরেকটি সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে বিএনপিএস এনার নাহার কেন্দ্র অফিসে। এখান থেকে ২০২০ সালের মার্চে ৩০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়ে মুছাপুর ৭ নং ওয়ার্ডের ধনকাজীর বাড়ীর আপেল নারী উন্নয়ন সমিতির সভাপতি স্বামী পরিত্যাক্তা খালেদা বেগম(৩৫)ঘরে বসে সেলাই কাজ করে বর্তমানে মাসে সাড়ে ৭ হাজার টাকার মতো আয় করছেন। এতে করে তার দারিদ্রতা দুর হয়েছে। আশ্রয়হীন এ নারী গত ১ বছরে সামান্য জমি ক্রয় করে থাকার জন্য একটি কাঁচা ঘরও দিয়েছেন। স্থানীয় বদিউজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রণিতে পড়ুয়া তার একমাত্র কন্যাকে নিয়ে খালেদা বেগম আর্থিক স্বচ্ছলতায় দিন কাটাচ্ছেন।
তিনি তার মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার স্বপ্ন দেখছেন।
সন্দ্বীপে এ রকম অনেক উদাহরন সৃস্টি করেছে নারী প্রগতি সংঘের ‘ প্রাইম ‘প্রকল্প। এ বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার সন্দ্বীপ কেন্দ্র ব্যাবস্থাপক মোঃ সামসুদ্দিন এ প্রতিবেদককে বলেন- জার্মানী ‘ র দাতা সংস্থা – গ্রেড ফর দ্যা ওয়ার্ল্ড এর অর্থায়নে
এবং বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের ব্যাবস্থাপনায়, সন্দ্বীপ কেন্দ্র প্রাইম প্রকল্পের উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

বর্তমান সংকটের সমাধান নবীজির শিক্ষা সম্পাদকীয় আজ ১২ রবিউল আউয়াল, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। দিনটি বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর জন্য পবিত্র, অনন্য ও শিক্ষণীয়। এ দিনে জন্ম নেন বিশ্বমানবতার আলোকবর্তিকা হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং একই দিনে তিনি পৃথিবী ত্যাগ করেন। নবীজির আগমন ছিল মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরিবর্তনের সূচনা। তাঁর জীবন ও শিক্ষা আজও যুগে যুগে প্রাসঙ্গিক বিশেষ করে আমাদের বর্তমান সময়ে।বাংলাদেশ আজ গভীর অন্ধকারে নিঃশ্বাস ফেলছে। চারপাশে ছড়িয়ে আছে বিভাজন, হানাহানি, দুর্নীতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা, আর নৈতিক অবক্ষয়। সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত জীবনের মৌলিক নিরাপত্তা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত। দোকানের তাক থেকে চাল, ডাল, তেল—প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। কৃষক ফসল বিক্রি করতে পারছেন না, শ্রমিক ঘাম ঝরিয়েও ন্যায্য মজুরি পাচ্ছেন না। তরুণ প্রজন্ম কাজের অভাবে হতাশ, শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসাত্মক সংকটের মুখোমুখি। এর সঙ্গে জুড়ে গেছে মাদক, অপরাধ ও সহিংসতার প্রলয়।এই সংকটে আমরা ভুলে যাই সেই আলোর পথে, যিনি মানবজাতিকে অন্ধকার থেকে মুক্ত করেছিলেন—রাসূলুল্লাহ হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি এসেছিলেন এমন এক সমাজে, যেখানে গোত্রবিভাজন, মিথ্যা, নারীর অবমাননা, দারিদ্র্য, নিপীড়ন ও সহিংসতা ছিল নিত্যদিনের বাস্তবতা। তিনি আমাদের দেখিয়েছিলেন সত্য, ন্যায়, দয়া ও মানবতার পথ। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “মানুষের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে অন্যের জন্য সবচেয়ে বেশি কল্যাণ বয়ে আনে।” আজকের বাংলাদেশে যদি আমরা তাঁর এই শিক্ষার অনুসরণ করি, তবে সমাজে স্বার্থপরতা, দুর্নীতি ও বৈষম্য দূর করা সম্ভব।সাংবাদিকরা যখন সত্য প্রকাশের জন্য নির্যাতনের মুখোমুখি হন, তখন নবীজির শিক্ষা আমাদের শেখায়—সত্যের পথে থাকা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সাহসী হওয়া। তিনি বলেছেন, “সর্বশ্রেষ্ঠ জিহাদ হলো অন্যায় শাসকের সামনে সত্য কথা বলা।” সাংবাদিকরা দেশের ন্যায়বিচার রক্ষায় যে ভূমিকা রাখেন, তা নবীজির দৃষ্টিকোণ থেকে সত্যিই মহৎ।রাজনীতিতেও আমাদের শিক্ষা প্রয়োজন। ক্ষমতার জন্য লড়াই, প্রতিশোধ, হিংসা—এগুলো জাতিকে ক্ষয় করছে। অথচ নবীজি মক্কা বিজয়ের দিন শত্রুকেও ক্ষমা করেছিলেন। আজকের নেতারা যদি তাঁর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতেন, সংলাপ ও ক্ষমাশীলতার মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যেত।অর্থনীতি এবং শ্রমিক অধিকারেও নবীজির শিক্ষা অসাধারণ। তিনি বলেছেন, “শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগে তার মজুরি প্রদান করো।” শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা, কৃষকের ফসলের সঠিক দাম, প্রবাসীর রেমিট্যান্সের মর্যাদা—এসবই নবীজির শিক্ষার বাস্তবায়ন।নবীজির জীবন থেকে আমরা আরও শিখি মানবিক সহমর্মিতা। তিনি শত্রুকেও ক্ষমা করেছিলেন, দুর্বলকে রক্ষা করেছিলেন। অথচ আমাদের সমাজে হিংসা, ঘৃণা, বৈষম্য বেড়েছে। দরিদ্র ও অসহায়দের প্রতি সহানুভূতি বাড়ানো, ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা—এসবই নবীজির শিক্ষা অনুযায়ী। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়া মানেই শুধু ধর্মীয় আচার পালন নয়; বরং তা সামাজিক ন্যায়বিচার, রাষ্ট্র পরিচালনা, অর্থনৈতিক ভারসাম্য ও মানবতার প্রতি দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠার আহ্বান। বর্তমান বৈশ্বিক অস্থিরতার যুগে এ শিক্ষা গ্রহণই পারে আমাদেরকে শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও মানবিকতার পথে এগিয়ে নিতে। আজ, ঈদে মিলাদুন্নবী আমাদের মনে করিয়ে দেয়—এই দিনটি কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং আত্মসমালোচনার দিন। যদি আমরা তাঁর জীবন ও শিক্ষাকে না বুঝি, তবে দুর্নীতি, সহিংসতা ও বৈষম্যের অন্ধকার থেকে বের হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু যদি আমরা সত্যিই তাঁর শিক্ষা অনুসরণ করি—রাজনৈতিক নেতৃত্ব, অর্থনীতি, সাংবাদিকতা, সাধারণ মানুষের জীবন সবক্ষেত্রে—তাহলে বাংলাদেশ হতে পারে শান্তি, ন্যায় ও সমৃদ্ধির দেশ। ঈদে মিলাদুন্নবী আমাদের কেবল ঐতিহাসিক স্মরণ নয়, বরং আত্মসমালোচনা ও কর্মপ্রেরণার দিন। নবীজির (সা.) শিক্ষা বাস্তবায়ন করলেই— রাজনৈতিক সংকট কাটবে ন্যায়ভিত্তিক নেতৃত্বের মাধ্যমে, সামাজিক অবক্ষয় রোধ হবে নৈতিকতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস পাবে সুষম বণ্টন ও জাকাত ব্যবস্থার মাধ্যমে, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা পাবে সহনশীলতা ও মানবপ্রেমের মাধ্যমে। আজকের আহ্বান: রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন যে—সংকটমুক্ত জাতি গড়ার একমাত্র পথ তাঁর জীবন ও শিক্ষার অনুসরণ। আমাদের প্রত্যেকের উচিত— রাজনৈতিক নেতা হোক ক্ষমাশীল ও ন্যায়পরায়ণ, অর্থনীতির নিয়ম হোক ন্যায্য ও বৈষম্যমুক্ত, সাংবাদিক হোক সাহসী ও সত্যনিষ্ঠ, সাধারণ মানুষ হোক সততা, সহনশীলতা ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর শিক্ষা—এটাই হতে পারে আমাদের দেশের অন্ধকার থেকে মুক্তির একমাত্র আলো। আমরা বিশ্বাস করি, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর শিক্ষা আজকের পৃথিবীতে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রয়োজন। যুদ্ধবিদ্ধস্ত বিশ্ব, বিভক্ত মুসলিম উম্মাহ, দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজ ও অস্থির তরুণ প্রজন্ম—সব সমস্যার সমাধান রয়েছে নবীজির দেখানো পথে। তাই আমাদের প্রতিজ্ঞা হওয়া উচিত, ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্র ও বিশ্ব রাজনীতি পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষা বাস্তবায়ন করা। কেবল তখনই মানবতা সত্যিকারের মুক্তি পাবে।আজকের পৃথিবী যেন নানা সংকটে ঘেরা—যুদ্ধ, দুর্নীতি, বৈষম্য, রাজনৈতিক অস্থিরতা, পরিবেশ বিপর্যয়, নৈতিক অবক্ষয়—এসব আমাদের সমাজকে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত করছে। মুসলিম বিশ্বও এ সংকট থেকে মুক্ত নয়। অথচ আমাদের সামনে রয়েছে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত—রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন ও শিক্ষা। রাসূলুল্লাহ (সা.) এমন এক যুগে আগমন করেছিলেন, যখন আরব সমাজ ছিল অন্ধকারে নিমজ্জিত। গোত্রবাদ, অবিচার, নারী নিপীড়ন, মিথ্যা প্রতিযোগিতা আর সহিংসতায় জর্জরিত ছিল গোটা সমাজ। ঠিক সেখানেই তিনি ন্যায়, সাম্য, দয়া, ভ্রাতৃত্ব আর মানবতার আলো জ্বালিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম, যে তার আচার-আচরণে উত্তম।” আজকের সমাজে এই বাণীই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন। বর্তমান সংকটে আমরা দেখি—ক্ষমত

বর্তমান সংকটের সমাধান নবীজির শিক্ষা সম্পাদকীয় আজ ১২ রবিউল আউয়াল, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। দিনটি বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর জন্য পবিত্র, অনন্য ও শিক্ষণীয়। এ দিনে জন্ম নেন বিশ্বমানবতার আলোকবর্তিকা হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং একই দিনে তিনি পৃথিবী ত্যাগ করেন। নবীজির আগমন ছিল মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরিবর্তনের সূচনা। তাঁর জীবন ও শিক্ষা আজও যুগে যুগে প্রাসঙ্গিক বিশেষ করে আমাদের বর্তমান সময়ে।বাংলাদেশ আজ গভীর অন্ধকারে নিঃশ্বাস ফেলছে। চারপাশে ছড়িয়ে আছে বিভাজন, হানাহানি, দুর্নীতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা, আর নৈতিক অবক্ষয়। সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত জীবনের মৌলিক নিরাপত্তা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত। দোকানের তাক থেকে চাল, ডাল, তেল—প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। কৃষক ফসল বিক্রি করতে পারছেন না, শ্রমিক ঘাম ঝরিয়েও ন্যায্য মজুরি পাচ্ছেন না। তরুণ প্রজন্ম কাজের অভাবে হতাশ, শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসাত্মক সংকটের মুখোমুখি। এর সঙ্গে জুড়ে গেছে মাদক, অপরাধ ও সহিংসতার প্রলয়।এই সংকটে আমরা ভুলে যাই সেই আলোর পথে, যিনি মানবজাতিকে অন্ধকার থেকে মুক্ত করেছিলেন—রাসূলুল্লাহ হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি এসেছিলেন এমন এক সমাজে, যেখানে গোত্রবিভাজন, মিথ্যা, নারীর অবমাননা, দারিদ্র্য, নিপীড়ন ও সহিংসতা ছিল নিত্যদিনের বাস্তবতা। তিনি আমাদের দেখিয়েছিলেন সত্য, ন্যায়, দয়া ও মানবতার পথ। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “মানুষের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে অন্যের জন্য সবচেয়ে বেশি কল্যাণ বয়ে আনে।” আজকের বাংলাদেশে যদি আমরা তাঁর এই শিক্ষার অনুসরণ করি, তবে সমাজে স্বার্থপরতা, দুর্নীতি ও বৈষম্য দূর করা সম্ভব।সাংবাদিকরা যখন সত্য প্রকাশের জন্য নির্যাতনের মুখোমুখি হন, তখন নবীজির শিক্ষা আমাদের শেখায়—সত্যের পথে থাকা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সাহসী হওয়া। তিনি বলেছেন, “সর্বশ্রেষ্ঠ জিহাদ হলো অন্যায় শাসকের সামনে সত্য কথা বলা।” সাংবাদিকরা দেশের ন্যায়বিচার রক্ষায় যে ভূমিকা রাখেন, তা নবীজির দৃষ্টিকোণ থেকে সত্যিই মহৎ।রাজনীতিতেও আমাদের শিক্ষা প্রয়োজন। ক্ষমতার জন্য লড়াই, প্রতিশোধ, হিংসা—এগুলো জাতিকে ক্ষয় করছে। অথচ নবীজি মক্কা বিজয়ের দিন শত্রুকেও ক্ষমা করেছিলেন। আজকের নেতারা যদি তাঁর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতেন, সংলাপ ও ক্ষমাশীলতার মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যেত।অর্থনীতি এবং শ্রমিক অধিকারেও নবীজির শিক্ষা অসাধারণ। তিনি বলেছেন, “শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগে তার মজুরি প্রদান করো।” শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা, কৃষকের ফসলের সঠিক দাম, প্রবাসীর রেমিট্যান্সের মর্যাদা—এসবই নবীজির শিক্ষার বাস্তবায়ন।নবীজির জীবন থেকে আমরা আরও শিখি মানবিক সহমর্মিতা। তিনি শত্রুকেও ক্ষমা করেছিলেন, দুর্বলকে রক্ষা করেছিলেন। অথচ আমাদের সমাজে হিংসা, ঘৃণা, বৈষম্য বেড়েছে। দরিদ্র ও অসহায়দের প্রতি সহানুভূতি বাড়ানো, ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা—এসবই নবীজির শিক্ষা অনুযায়ী। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়া মানেই শুধু ধর্মীয় আচার পালন নয়; বরং তা সামাজিক ন্যায়বিচার, রাষ্ট্র পরিচালনা, অর্থনৈতিক ভারসাম্য ও মানবতার প্রতি দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠার আহ্বান। বর্তমান বৈশ্বিক অস্থিরতার যুগে এ শিক্ষা গ্রহণই পারে আমাদেরকে শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও মানবিকতার পথে এগিয়ে নিতে। আজ, ঈদে মিলাদুন্নবী আমাদের মনে করিয়ে দেয়—এই দিনটি কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং আত্মসমালোচনার দিন। যদি আমরা তাঁর জীবন ও শিক্ষাকে না বুঝি, তবে দুর্নীতি, সহিংসতা ও বৈষম্যের অন্ধকার থেকে বের হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু যদি আমরা সত্যিই তাঁর শিক্ষা অনুসরণ করি—রাজনৈতিক নেতৃত্ব, অর্থনীতি, সাংবাদিকতা, সাধারণ মানুষের জীবন সবক্ষেত্রে—তাহলে বাংলাদেশ হতে পারে শান্তি, ন্যায় ও সমৃদ্ধির দেশ। ঈদে মিলাদুন্নবী আমাদের কেবল ঐতিহাসিক স্মরণ নয়, বরং আত্মসমালোচনা ও কর্মপ্রেরণার দিন। নবীজির (সা.) শিক্ষা বাস্তবায়ন করলেই— রাজনৈতিক সংকট কাটবে ন্যায়ভিত্তিক নেতৃত্বের মাধ্যমে, সামাজিক অবক্ষয় রোধ হবে নৈতিকতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস পাবে সুষম বণ্টন ও জাকাত ব্যবস্থার মাধ্যমে, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা পাবে সহনশীলতা ও মানবপ্রেমের মাধ্যমে। আজকের আহ্বান: রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন যে—সংকটমুক্ত জাতি গড়ার একমাত্র পথ তাঁর জীবন ও শিক্ষার অনুসরণ। আমাদের প্রত্যেকের উচিত— রাজনৈতিক নেতা হোক ক্ষমাশীল ও ন্যায়পরায়ণ, অর্থনীতির নিয়ম হোক ন্যায্য ও বৈষম্যমুক্ত, সাংবাদিক হোক সাহসী ও সত্যনিষ্ঠ, সাধারণ মানুষ হোক সততা, সহনশীলতা ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর শিক্ষা—এটাই হতে পারে আমাদের দেশের অন্ধকার থেকে মুক্তির একমাত্র আলো। আমরা বিশ্বাস করি, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর শিক্ষা আজকের পৃথিবীতে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রয়োজন। যুদ্ধবিদ্ধস্ত বিশ্ব, বিভক্ত মুসলিম উম্মাহ, দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজ ও অস্থির তরুণ প্রজন্ম—সব সমস্যার সমাধান রয়েছে নবীজির দেখানো পথে। তাই আমাদের প্রতিজ্ঞা হওয়া উচিত, ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্র ও বিশ্ব রাজনীতি পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষা বাস্তবায়ন করা। কেবল তখনই মানবতা সত্যিকারের মুক্তি পাবে।আজকের পৃথিবী যেন নানা সংকটে ঘেরা—যুদ্ধ, দুর্নীতি, বৈষম্য, রাজনৈতিক অস্থিরতা, পরিবেশ বিপর্যয়, নৈতিক অবক্ষয়—এসব আমাদের সমাজকে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত করছে। মুসলিম বিশ্বও এ সংকট থেকে মুক্ত নয়। অথচ আমাদের সামনে রয়েছে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত—রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন ও শিক্ষা। রাসূলুল্লাহ (সা.) এমন এক যুগে আগমন করেছিলেন, যখন আরব সমাজ ছিল অন্ধকারে নিমজ্জিত। গোত্রবাদ, অবিচার, নারী নিপীড়ন, মিথ্যা প্রতিযোগিতা আর সহিংসতায় জর্জরিত ছিল গোটা সমাজ। ঠিক সেখানেই তিনি ন্যায়, সাম্য, দয়া, ভ্রাতৃত্ব আর মানবতার আলো জ্বালিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম, যে তার আচার-আচরণে উত্তম।” আজকের সমাজে এই বাণীই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন। বর্তমান সংকটে আমরা দেখি—ক্ষমত

এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com