
মোঃ আমিনুল ইসলাম সিনিয়র রিপোর্টারঃ
দৈনিক মাতৃজগতের সিনিয়র রিপোর্টার মোঃ আমিনুল ইসলামের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে বরিশালের মুলাদী উপজেলার চরকালেখান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব মিরাজ সরদার
আপনার বাবা,সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম শুক্কুর আহমেদ এর উন্নয়নমূলক কিছু কাজ সম্পর্কে জানতে চাই–
মিরাজ সরদারঃ – আমার পিতা মরহুম শুকুর আহমেদ সরদার পরপর তিনবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। আমার বড় ভাই জনাব সবুর সরদার একবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন, আমার শ্বশুর জনাব আব্দুস সালাম খান একবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন, আমার চাচা শশুর জনাব রুহুল আমিন খান দুইবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।আমার বাবা চেয়ারম্যান থাকাকালীন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পূর্ব বাণী মর্দন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্মাণের জায়গা আমার বাবা দিয়েছেন। এরকম আরো অসংখ্য কাজ আমার বাবা করে গিয়েছেন। তার সেই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে চাই। 
কেমন চলছে আপনার ইউনিয়ন পরিষদ??
-এমন জিজ্ঞাসার জবাবে চেয়ারম্যান মিরাজ সরদার বলেন, আমার ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম গতিশীলভাবে চলছে। উন্নয়নমূলক কাজকর্মের সাথে এলাকার কোনো এলাকায় সমস্যা দেখা দেয়ার সাথে সাথে সেখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়। এজন্য ইউনিয়নে শান্তি-শৃংখলা বিরাজ করছে; আমরা ইউনিয়নের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে সময় দিতে পারছি।
আপনার এলাকার ভোটারগণ কোনো সমস্যা নিয়ে আপনার শরণাপন্ন হলে আপনি কীভাবে সমাধান করেন –
এমন প্রশ্নের জবাবে মিরাজ সরদার বলেন, আমি প্রত্যেকের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনি। উদ্ভূত সমস্যা নিয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার, জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য লোকদের সাথে আলোচনা করি এবং সমাধানের একটা পথ বের করি। কেউ আমার কাছ থেকে হতাশ বা বিফল হয়ে ফিরে যায় না।
আপনার ইউনিয়নে প্রধান সমস্যা কী কী এবং সেগুলোর সমাধানে আপনি কী ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন –
এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান মিরাজ সরদার বলেন, আমার ইউনিয়নে অন্যতম সমস্যা গুলো হলো নদী ভাঙ্গন।আমার প্রচেষ্টায় মাননীয় এমপি মহোদয় জনাব গোলাম কিবরিয়া টিপু এক কোটি আটচল্লিশ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বানিমর্দন থেকে গলাই ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৪০০মিটার বাঁধ নির্মাণ করবেন এবং মৃধারহাট থেকে ষোলোঘর পর্যন্ত বাধ নির্মানের অনুমোদনও হয়ে গেছে।
চেয়ারম্যান মিরাজ সরদার আরও বলেন, আমার ইউনিয়নে আরেকটি সমস্যা হলো- পানীয় জলের সংকট। আমি বিভিন্ন স্থানে ডিপ টিউবওয়েল স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি, যাতে এলাকার লোকজন আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জলের চাহিদা মেটাতে পারে। প্রায় একশর মত ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন করেছে। এ ব্যাপারে কাজের কিছু অগ্রগতিও হয়েছে। আশা করছি, এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন হলে ইউনিয়নের জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্য-অবনতির আশংকা দূরীভূত হবে।
আপনার ইউনিয়নের উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোন্ কোন্ বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন –
এমন প্রশ্নে চেয়ারম্যান মিরাজ সরদার বলেন, সড়ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। যানবাহন চলাচল সচল থাকলে এলাকার যাতায়াত, ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর তার শুভ প্রতিফলন পড়বে। আমি প্রায় ১৬ টি সড়ক মেরামত করেছি।একটি ব্রিজ ও তিনটি কালভার্ট নির্মাণ করেছে।
আপনার ইউনিয়নের শিক্ষার ক্ষেত্রে আপনি কি কি অবদান রেখেছেন?
মিরাজ সরদারঃ-আমাদের ইউনিয়নের একটি মাদ্রাসা এমপিও ভুক্ত করা হয়েছে ।একটি স্কুল এসএসসি পর্যন্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।এছাড়াও অসংখ্য মসজিদ,মাদ্রাসা ও ইয়াতিমখানায় আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। একটি কলেজ ও সাতটি স্কুলে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্হাপন করা হয়েছে।
আপনার ইউনিয়নের তথ্য-সেবাকেন্দ্রের মাধ্যমে জনগণ কতটুকু উপকৃত হচ্ছেন বলে মনে করেন –
এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তথ্য-প্রযুক্তির সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার সরকারের কল্যাণকর পরিকল্পনার অধীনে দেশের প্রতিটি ইউনিয়নেই তথ্যসেবা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ কেন্দ্র থেকে আমার ইউনিয়নের জনগণ অনেক সুবিধা ভোগ করছে, স্থানীয় জনগণ এ কেন্দ্রের সেবালাভ করে অনেক উপকৃত। আগে তাদেরকে মহকুমা বা জেলা শহরে গিয়ে এ সেবা নিতে হতো, এখন তারা হাতের কাছেই পেয়ে যাচ্ছে সব তথ্য। এতে তারা দারুণ খুশি।
ইউনিয়নের সার্বিক উন্নয়নে তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন,
সড়ক পথ,শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতসহ অন্যান্য যে কাজগুলো অসমাপ্ত আছে, সেগুলো সম্পূর্ণ করা আমাদের লক্ষ্য।এছাড়াও দুটি পাবলিক টয়লেট নির্মাণসহ বাজার উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে নমরহাট বাজারে চার তলা ভবন নির্মাণ করা হবে।
আশ্রয়ন প্রকল্প সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, মৃধারহাটে একটি আশ্রায়ন প্রকল্প নির্মাণ করা হয়েছে যেখানে ৮১ টি ঘর রয়েছে। আমরা ভূমিহীনদের মাঝে তা বিতরণ করেছি।
আশ্রয়ন প্রকল্প নিয়ে আর্থিক লেনদেন হয়েছে এমন অভিযোগ রয়েছে এ ব্যাপারে আপনি কতটুকু জানেন? –
জবাবে চেয়ারম্যান মিরাজ সরদার বলেন, অভিযোগ থাকতে পারে তবে এ সম্পর্কে আমি নিশ্চিত নই।
সর্বশেষ আপনার ব্যক্তিগত কোনো মতামত আছে কিনা-
মিরাজ সরদারঃ-আমার ইউনিয়নের জনগণ ভালো থাকলে, সুখে থাকলে তাতেই আমি সুখী। ধন্যবাদ।
-মাতৃজগত পরিবারের পক্ষ থেকে আপনাকেও ধন্যবাদ।
Leave a Reply