পটুয়াখালীতে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ, সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন
মোঃ কবির হাওলাদার
স্টাফ রিপোর্টর
পটুয়াখালী সদর উপজেলা আউলিয়াপুর ইউনিয়নে আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে বিদ্যালয়ের সভাপতি,ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো,আব্দুল রাজ্জাক মিয়ার বিরুদ্ধে পটুয়াখালী জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে স্কুলটির দাতা সদস্য মোহাম্মদ হাসান। পটুয়াখালী জেলা প্রেসক্লাবের মিলনায়তন এ সংবাদ সম্মেলনটি হয়। সংবাদ সম্মেলনে স্কুলটির দাতা সদস্য মোহাম্মদ হাসান ঘটনার বরাত দিয়ে জানান, আমার সদস্য থাকাকালীন সময়ে অনাব জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার, ডা: মো: শফিকুল ইসলাম ও সর্বশেষ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে জনাব মুজাহিদুল ইসলাম প্রিন্স দায়িত্ব পালন করেন। এই তিন সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে বিদ্যালয়ের আর্থিক কোন বিষয় নিয়ে এলাকার মানুষের কোন অভিযোগ ছিলো না। তারা বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠান বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, বার্ষিক বনভোজন, শিক্ষা সফরসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানে নিজেদের পকেটের অর্থ দিয়ে সহয়তা করেছি। বিদ্যালয়ের হলরুম ডাঃ মোঃ শফিকুল ইসলাম, মুজাহিদুল ইসলাম প্রিন্স ও আমাদের কার্যকরি কমিটির আর্থিক সহায়তা ছাড়া নির্মান করা কোন ভাবেই সম্ভব হোত না। তাছাড়া আমরা দায়িত্বে থাকাবস্থায় বিগত দিনগুলোতে বিদ্যালয়ের আয়কৃত সমস্ত অর্থ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি কমিটি গঠন করে বার্ষিক বাজেট প্রনয়নের মাধ্যমে খরচ করা হয়েছে। বিদ্যালয় থেকে যে টাকা উদ্বৃত্ত রয়েছে তা বিদ্যালয়ের রুপালি ব্যাংকের হিসাব নম্বর-১৮৮৩ নিউ টাউন শাখায় জমা করা হয়েছে। বর্তমান এডহক কমিটি গঠনের পর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ইং তারিখ
বিদ্যালয়ের এসএসসি ফরম ফিলাপ, ভর্তি ফি, পূর্ণ: ভর্তিফি সহ অন্যান্য আয়ের দুই লক্ষ টাকা দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা ব্যাংকে জমা করে দেন। তখন ব্যাংকে বিদ্যালয়ের তহবিলে মোট জমা ছিলো ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৯৪৩ টাকা ১৩ পয়সা। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক মিলে একই দিনে অর্থাৎ ১৬ ফেব্রুয়ারি উক্ত দুই লক্ষ টাকা ব্যাংকে রিভার্স দেখিয়ে জনৈক আবু জাফর মো: সালেহ এর নামে স্থায়ী দাতা হিসেবে জমা প্রদান করেন। কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক মাত্র ৭ দিন পর ২৩ ফেব্রুয়ারি চেক নং-১৮৯৪৭৪৯ এর মাধ্যমে প্রথমে দুই লাখ এবং চেক নং-১৮৯৪৭৫০ এর মাধ্যমে একই দিনে আরো ৩০ হাজার টাকা উত্তোলন করে তসরুপ করেন পরবর্তীতে বিদ্যালয়ের তহবিল থেকে ১৪ মার্চ ২০২৩ ইং চেক নং-১৭৮১৯১ এর মাধ্যমে আবারো ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। এরপর ১৬ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখ এডহক কমিটির সভাপতি গোলাম সরোয়ার বাদলের নামে স্থায়ী দাতা হিসেবে দুই লক্ষ টাকা জমা করা হয়। তার একদিন পর চেক নং-১৭৮১৯২ এর সেই মাধ্যমে জমাকৃত দুই লক্ষ টাকা তুলে নেন সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। পরবর্তীতে মে ২০২০ ইং তারিখ আরো ২০ হাজার টাকা একাউন্ট থেকে তুলে নেন সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক।
এরই ধারাবাহিকতায় সভাপতি ও শিক্ষক মিলে বিদ্যালয়ের কোন দৃশ্যমান কাজ না করে ৬ লাখ ১২ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন বলে জানা যায়। এবিষয়ে আউলিয়াপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো, আব্দুর রাজ্জাক মিয়া বলেন, আমরা প্রতিটা খরচের জন্য সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, রেজুলেশন ও বিল ভাউচার করে বিদ্যালয়ের উন্নয়নে কাজে ব্যয় করছি। আপনারা আসলে স্বচক্ষে উন্নয়ন কার্যক্রম দেখতে পারবেন। এ ব্যপারে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি গোলাম সরোয়ার বাদল দৈনিক বরিশাল সমাচারকে বলেন, আমি যখন এই বিদ্যালয়ের আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব নেই, তখন স্কুলের একাউন্টে মাত্র ১৮ টাকা ছিল। বিগত দিনে স্কুলের শহীদ মিনার নির্মাণ, বার্ষিক ক্রিড়া প্রতিযোগিতা,জন্মদিন পালন, বিভিন্ন দিবস উদযাপন ও আপ্যায়নসহ বিভিন্ন খাতে খরচ করা হয়েছে।এবং এসকল খরচ প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক করেছে। এসময় তিনি আরও বলেন, সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মোহাম্মদ হাসান নামের একব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাৎ’র যে মিথ্যা অভিযোগের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত নানান ধরনের মিথ্যা তথ্য প্রদান করে সম্মানহানী করেছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে মুজাহিদুল ইসলাম প্রিন্স নামে যে ব্যক্তিকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বলা হয়েছে, ওনি আসলে কখন ঐ বিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলো না।আর বিধিবিধানে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বলে কোন পদ নেই বলে জানান তিনি।
Leave a Reply