
উত্তর বঙ্গের শিবগঞ্জে আম হিমাগার প্রতিষ্ঠা হওয়ায় আম চাষী ও ব্যবসায়ীরা খুশি
মোঃ মাইনুল ইসলাম লাল্টু
শিবগঞ্জ(চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি :
পাঁচ হাজার ছয় ‘শ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতা সম্পূর্ন আম হিমাগার তৈরী হওয়ায় আমচাষীরা অনেকটা আশায় বুক বেঁধেছে।এটি হয়েছে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শাহাবাজপুর ইউনিয়নের কয়লাবাড়ি নামক স্থানে। নাম দেয়া হয়েছে আজান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড। এটি শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় নয়,উত্তর বঙ্গের মধ্যে সর্ববৃহত ও সর্বপ্রথম আম হিমাগার। হিমাগারের ব্যবস্থাপক আবু নাইম বলেন ইতিমধ্যে আমরা এ হিমাগারে রাখা ফজলী, ন্যাংড়া,আশ্বীনা, রুপালী, খীরসাপাত, লখনাসহ বিভিন্ন জাতের ৪০ মেট্রিকটন আম বিক্রী করেছি। বর্তমানে বানিজ্যিকভাবে শুরু করেছি। লাভ হয়নি, তবে লোকসানও হয়নি। বর্তমানে রুপালী, আশ্বিনা, ফজলী,সহ কয়েকজাতের প্রায় পাঁচ টন আম আছে। যা সর্বোচ্চ ২৮ দিন রাখা যাবে।প্রথমে আমরা পরীক্ষামূলকভাবে হিমাগারে আম রেখেছি। এখন বানিজ্যিকভাবে রাখতে শুরু করেছি।আবু নাইম বলেন জার্মানী প্রযুক্তিতে ফল সংরক্ষণের অত্যাধুনিক প্রতিষ্ঠানের মূল মালিক হলো নারায়নগঞ্জ জেলার আড়াই হাজার থানার রাকিবুল ইসলাম।তিনি নরসিংদী সদরের এম এ কাওছার মিলনের নিকট হতে ক্রয় করেছেন। হিমাগারের মোট আয়তন হলো ২৮৮শতাংশ। বাউন্ডারীসহ ভিতরের আয়তন ২২৪ শতাংশ, হট ওয়াশ চেম্বারের আয়তন ২০ শতাংশ, কোল্ড স্টোরেজ প্লান্টের আয়তন ১৩০ শতাংশ, চেম্বার সংখ্যা ছয়টি এবং পুকুরের আয়তন ৬৪ শতাংশ।তথ্য অনুযায়ী ২০২১সালে এ হিমাগারে প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে ফজলী,খিরসাপাত ও লক্ষণভোগ এক মেট্রিক টন আম রেখে ২৮দিন পর বের করা হয়েছিল। তাতে সম্পূর্ন আম অক্ষত ছিল। ২০২২সালে ৫‘শ কেজি গাজর, ২‘শ কেজি কাঁচা মরিচ ও ২‘শ কেজি টমেটো রাখা হয়েছিল। গাজর ২৮দিন পর ও কাঁচা মরিচ ও টমেটো ১৫দিন পর বের করা হয়েছিল। যা অক্ষত অবস্থায় ছিল। চলতি বছরে ১১জুন হতে ২৩জুন পর্যন্ত ৩২মেট্রিক টন খিরসাপাত, দুই মেট্রিক টন ল্যাংড়া সংরক্ষণ করা হয়েছিল।কর্তৃপক্ষ জানান এখানে পোলিশ ও ছত্রাকনাশক ওয়াশ করা হয়। ওয়াশ ছাড়াও সংরক্ষণ করা যায়। তেব ছত্রাকনাশক ওয়াশে আমের রং ভাল থাকে।তিন ধাপে সংরক্ষণ করা যেতে পারে। প্রথম ধাপে প্রি- কোলিং ১৬-২০ডিগ্রী সেলসিয়াশে ৬- ৮ঘন্টা দ্বিতীয় ধাপে কোলিং ২.৭ডিগ্রী সেলসিয়াশে ও পোষ্ট কুলিং ১৬-২০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ৬-৮ঘন্টা রাখতে হয়। অন্যদিকে শিবগঞ্জ একাডেমীর মোড়ে বিশিষ্ট আম ব্যবসায়ী ও আম উদ্যোক্তা ইসমাইল হোসেন শামীম খান ব্যক্তিগত ভাবে আট মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতা সম্পূর্ন সবজি ও ফল হিমাগার করা হয়েছে। যেখানে গত বছর ১৪দিন পর্র্যন্ত ভাল ছিল । এ বছর বেশ কয়েকট আম রাখা হয়েছিল । প্রায় ২০দিন পর্যন্ত ভাল ছিল। এ ব্যাপারে শামীম খান বলেন পুরাপুরি সফল হতে পারলে এটিকে আরো সম্প্রসারণ করা হবে। শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম বলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমের রাজধানী হলেও এবং অনেক ধনী লোক থাকলে আম সংরক্ষণের ব্যাপারে সচেতন নয়। তবে রাকিবুল ইসলাম ও ইসমাইল হোসেন শামীম খান যে হিমাগার তৈরী করেছেন তার মধ্যে দিয়ে অনেকের সচেতনতা সৃষ্টি হবে এবং আরো আম হিমাগার তৈরী হবে। যাতে করে আম চাষী ও আম ব্যবসায়ীরা হিমাগারে আম রেখে কিছুদিন পরে বেশী দামে বিক্রী করতে পারবে। তিনি আরো বলেন আজান ট্রের্ডাস পরীক্ষামূলক ভাবে কাজ শুরু করে সফল হয়েছে। আগামীতে তারা পুরাদমে বানিজ্যিকভাবে আম হিমাগারে রাখতে পারবে। এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ থেকে সবসময় সহযোগিতা করা হবে।
Leave a Reply